তুরুতচণ্ডাল, Telegraph plant, Desmodium motorium
তুরুতচণ্ডাল (ইংরেজি নাম Telegraph plant, বৈজ্ঞানিক নাম Desmodium motorium, পরিবার Fabaceae) গুল্মটি আমাদের অনেকের কাছে খুব একটা পরিচিত না হলেও বিজ্ঞানী ও ভিষকদের কাছে বেশ ভালভাবে পরিচিত। গাছটির আরেকটি উল্লেখযোগ্য তথ্য রয়েছে, যেটি জানতে পারলে আমাদের সবারই ভাল লাগবে, গর্ব অনুভব করব।
তুরুত চণ্ডাল ছাড়াও এর কয়েকটি নাম রয়েছে, যেমন--তুরিচণ্ডাল, বনচণ্ডাল, গোরাচান। মজার ব্যাপার হচ্ছে, নামে চণ্ডালও আছে, আবার গোরাচান, অর্থাৎ চৈতন্যদেবও আছেন! গাছটির পাতা ফ্যাকাশে সবুজ। পাতার মধ্যশিরা সাদা। অনেক সময় পত্রাক্ষে (পাতাধারী অণু ডাল) তিনটি পাতা থাকে, একে বলে ত্রিপত্রী। এই ত্রিপত্রীর প্রথম পাতাটি, যেটি কিনা একেবারে অগ্রভাগে, বাকি দুইটি পাতার চাইতে বেশ বড় ও পুরুও বটে (৫-৭ সেমি লম্বা ও চওড়া ২-২.৫ সেমি)। আর ছোট-দুটির গুণপনার কথা আগেই বলা হয়েছে; এরা নিজে থেকেই নড়াচড়া করতে পারে। বেশি করে আলো সংশ্লেষণের জন্য পাতাগুলো এরকমটি করে থাকে বলে অনুমিত হয়। তা ছাড়া নিজেকে ক্ষতিকারক উপাদান থেকে রক্ষা করার এটা একটা উপায় হয়তো।
ফুলগুলো ডাল-পরিবারের অন্য অনেক
সদস্যের মতোই। হলদে-কমলাটে ফুলগুলো ফোটে মূলত বসন্তকালে। ফলগুলো শুটি, পাকলে কালো রঙ
ধারণ করে; ৩-৫ সেমি লম্বা। বীজ থাকে অনেক। ফল বিদারী, অর্থাৎ পাকলে বা শুকালে তা ফেটে
বীজ ঝরে পড়ে। মূলত বীজ থেকেই গাছটির বংশ বৃদ্ধির কাজটি চলে।
আলঙ্কারিক বা শোভাবর্ধক গাছ হিসেবে এটি বাগানে লাগানো যেতে পারে। সূর্যের আলো পড়ে এমন স্থানে রোপণ করা হলে এটি প্রাণ পায়। আমাদের বা উপমহাদেশীয় লোকচিকিৎসকরা কাটা স্থানে, বাতের ব্যথায়, পেটের পীড়ায়, শ্বাসকষ্টে আর সর্দিকাশিসহ বেশ কয়েকটি রোগে ওষুধ হিসেবে গাছটির বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করে থাকেন।
Comments
Post a Comment