ঈশ্বরমূল, Indian birthwort, Aristolochia indica

ঈশ্বরমূল (ইংরেজি: Indian birthwort, বৈজ্ঞানিক নাম Aristolochia indica, পরিবার: Aristolochiaceaeবহুবর্ষজীবী কাষ্ঠল লতা। এর শেকড়ও কাষ্ঠল। লতাটি নরম রোমযুক্ত আর গোড়া কাষ্ঠল হলেও বাকি শরীর নরম। রূপান্তরিত ডালগুলো পরস্পরকে পেঁচিয়ে হয় মাটিতে বিছিয়ে থাকে নাহয় কোনো কিছুকে অবলম্বন করে উপরে ওঠে। সাধারণত বাংলাদেশের পতিত জমি, রাস্তা বা খালের ধারে এর দেখা মিলবে। উদ্ভিদটির আদিনিবাস আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশ।

অন্যান্য নাম : ঈশ্বের মূল, ঈশ্বের মূলী, ঈশের মূল; ঈশ্বরী, সুগন্ধা, রুদ্রজটা, রুদ্রলতা, পত্রবল্লী (সংস্কৃত)।

ঈশ্বরমূলের পাতাগুলো একবার দেখেই চেনা যায়। পাতাগুলো বেহালার মতো দেখতে, বল্লমাকার, ২-৪ সেমি লম্বা আর ১-২ সেমি চওড়া, অগ্রভাগ কিছুটা বাঁকা ও সূঁচালো।

ফুল ছোট হলেও আকারপ্রকারে অবাক-করা। নলাকার, লম্বা মুখ, রঙ সবজে সাদা, উপরের দিকটা বেশ প্লরম্বিত। সম্ভবত পোকামাড়কে পরাগায়ণে কাছে টানার এ কৌশল। পাতার কোণ থেকে ফুলগুলো গজায় বর্ষাকালে। ফুটতে থাকে প্রায় অক্টোবর পর্যন্ত। ফলগুলো অনেকটাই এ-গণের হংসলতা’র মতো, ২.৫ মেমি লম্বা। বীজগুলো অনেকটা ত্রিকোণাকার, পক্ষল। ফলগুলো বিদারী, অর্থাৎ পাকলে বীজ উন্মুক্ত করার জন্য ফেটে যায়। বীজের মাধ্যমে উদ্ভিদটি বংশ বৃদ্ধির কাজ চালায়।

ঈশ্বরমূল ভারতীয় উপমহাদেশের সর্বাধিকারতীয়ভ জনপ্রিয় ঔষধির একটি। এর মূল ও পাতা বেশকটি রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়া, বদহজম, বাতের ব্যথা, হাঁপানিতে এর প্রযোগ যুগ যুগ ধরে করে আসছে উপমহাদেশের লোকচিকিৎসকরা। এ ছাড়া শতপদী, বিছা ও সাপের কামড়ে এটি অহরহ ব্যবহৃত হয়। সাপের উৎপাত থেকে দূরে থাকার জন্য গ্রামগঞ্জের বসতবাড়িতে এ গাছ লাগানো হয়ে থাকে।

আলঙ্কারিক উদ্ভিদ হিসেবে বাগানে একে ঠাঁই দেয়া যায় এর পত্রবাহুল্য, পাতার অদ্ভুত-সুন্দর ভঙ্গি, ডালপালার পেঁচানো ও কোমল স্বভাব আর ফুলের বিশিষ্ট আকারের কারণে যেকোনো অবলম্বন, তা বাড়ি বা বাগানের ফটক, দেয়াল অথবা মাচার মতো করে দিলে এটি তরতর করে বাড়বে। বলা বাহুল্য বাংলাদেশের অধিকাংশ ঔষধি বাগানে এর দেখা মিলতে পারে। ‍  

Comments

Popular posts from this blog

আকনাদি : পাতাগুলি যেন কথা

ঢাকার প্রাকৃত বৃক্ষ শাল

রসুন, Garlic, Allium sativum